বৃটেনে বাংলাদেশী ছাত্র মোহাম্মদ তানিন (২৫) তার থেকে ২২ বছরের বড় মারিয়া মারকুইস (৪৭) নামের এক নারীকে বিয়ে করেছেন। এখানেই শেষ নয়। তিনি ও তার নববধূ মিলে আরও ৪ পর্তুগিজ যুবতীকে লন্ডনে নিয়ে গিয়েছেন তানিনের বাংলাদেশী বন্ধুদের সঙ্গে বিয়ে দেয়ার জন্য। এর বিনিময়ে প্রতিজন যুবতীর জন্য তানিন পেয়েছেন ২০০০ পাউন্ড। এ ঘটনা ফাঁস হওয়ায় লন্ডনে তোলপাড় চলছে। লোকজনের মুখে মুখে ঘুরছে এ বিষয়টি। এ নিয়ে আদালতে মামলা চলছে। তাতে বলা হয়েছে, মোহাম্মদ তানিন ২০০৩ সালে স্টুডেন্ট ভিসায় যুক্তরাজ্যে যান। কিন্তু তার ভিসার মেয়াদ যখন শেষ হয়ে আসে তখন তিনি কৌশল অবলম্বন করেন। আদালতে শুনানিতে বলা হয়েছে, তানিন তার ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার তিন মাস আগে তার থেকে ২২ বছরের বড় ওই নারীকে বিয়ে করেন লন্ডনের বো চার্চে। এর মধ্যে কোন ভালবাসার লেশমাত্র নেই, বরং এটা ছিল কন্ট্রাক্ট ম্যারিজ বা চুক্তিবদ্ধ বিয়ে। শুনানিতে বলা হয়েছে, মোহাম্মদ তানিন যুক্তরাজ্যে স্থায়ীভাবে বসবাসের কৌশল হিসেবে মারিয়াকে বিয়ে করেছেন। এর মাধ্যমে স্থায়ীভাবে বসবাসের সুবিধা পেলে তিনি শুধু যুক্তরাজ্যে নয় বিনা বাধায় ঘুরতে পারবেন ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন। তার এ মামলার শুনানি চলছে স্নারেসব্রক ক্রাউন কোর্টে। গতকাল এ নিয়ে অনলাইন ডেইলি মেইলে একটি বিস্তারিত প্রতিবেদন ছাপা হয়। তাতে আরও বলা হয়, তানিন ও মারিয়ার বিয়ের পর তারা পর্তুগিজ থেকে এই গ্রীষ্মে আরও চার নারীকে লন্ডনে নিয়ে যান। উদ্দেশ্য তাদেরকে তানিনের বাংলাদেশী বন্ধুদের সঙ্গে বিয়ে দেয়া। কিন্তু ওই বিয়ে আজও হয়নি। আদালতে বলা হয়, পর্তুগিজ প্রতিজন নারীকে লন্ডনে নিয়ে দেয়ার জন্য তানিন পেয়েছেন ২০০০ পাউন্ড। পূর্ব লন্ডনে তানিনের রয়েছে একটি বাসা। সেখানে ওই চার পর্তুগিজ নারীর মধ্যে তিনজন ভাড়া থাকেন। অনলাইন মেইল জানায়, স্টুডেন্ট ভিসায় তানিনের ৪ বন্ধু লন্ডনে প্রবেশ করেন। এ ভিসার মেয়াদ সীমিত সময়ের। এক সময় তারা সবাই বিয়ে করার আবেদন করেন। এই বিয়ের অনুমোদন দেয়া হলে তারাও তাদের পর্তুগিজ বাগদত্তাদের মতো একই অভিবাসী মর্যাদা লাভ করবেন। তাদের জন্য পর্তুগিজ চার কনেকে লন্ডনে নেয়ার এক সপ্তাহ পরে বাংলাদেশী তিন বন্ধু ২০১০ সালের জুলাই মাসে একই দিনে ম্যারিজ সার্টিফিকেটের জন্য আবেদন করেন। ওই চার পর্তুগিজ নারীর মধ্যে সবাইকে মারিয়া মারকুইস আগে থেকেই জানতেন। আদালতে ওই চার নারীই বিয়ের নামে কারসাজির কথা স্বীকার করেছেন। এর ফলে তানিন ও মারিয়ার বিরুদ্ধে মামলা জটিল হয়ে উঠবে। আদালতে প্রসিকিউটর পল রডনিটজ বলেছেন, ওই পর্তুগিজ চার নারীকে যুক্তরাজ্যে নিতে তানিন ৮০০ ইউরো দিয়েছেন। তাদেরকে যুক্তরাজ্যে নিতে তিনি স্ত্রী মারিয়াকে পাঠিয়েছিলেন লিসবনে। তিনি সেখানে গিয়ে তাদের সব অফিসিয়াল কর্মকাণ্ড সম্পাদনা করেছেন। পল আদালতে বলেন, এটা একটি লজ্জাজনক বিয়ে। এর মাধ্যমে ইউরোপীয় ইউনিয়নে স্থায়ী আবাসিক সুবিধা পাওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। এ ঘটনায় প্রতিজন পাত্র বাংলাদেশী এবং প্রতিজন পাত্রী পর্তুগিজ। তানিনের যে চার বাংলাদেশী বন্ধুকে স্টুডেন্ট ভিসায় যুক্তরাজ্যে নেয়া হয়েছে তারা একই দিন একই ফ্লাইটে লন্ডনে গিয়েছেন। তারা বিয়ের জন্য একই দিন ফরম পূরণ করেছেন। তাতে তানিন ও মারিয়া সহায়তা করেছেন। এসব ঘটনায় তানিন ও মারিয়া মারকুইসের বিরুদ্ধে অভিবাসনের নিয়ম লঙ্ঘন করার চারটি অভিযোগ তোলা হয়েছে। এখন তাদেরকে এই অভিযোগ মোকাবিলা করতে হবে।
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন